৪২৫ বার পঠিত
৪২৫ বার পঠিত
যারা ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শাসন পদ্ধতি দেখেনি (নতুন প্রজন্ম), তারা গত চার বছরে এর স্বাদ পেতে শুরু করেছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটাও তাদের কাছে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। এই নব্য আওয়ামী লীগ ৭২ এর আওয়ামী লীগ থেকে বিস্তর ম্যাচুর্ড ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, এবং নতুন নতুন কোকিল সমৃদ্ধ। তাই তারা জনগণের বিরুদ্ধ সকল অপশক্তিকে বর্তমানে ম্যানেজ করে তাদের শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখার সকল চেষ্টাই করে যাচ্ছে, চোরাবালিতে।
তাদের অতীত ও বর্তমান শাসনের প্রধান উপসর্গই হচ্ছে বিরোধীদের মুখ সেলাই করা, ধরে ধরে স্যাঁটা ভেঙে দেয়া, হত্যা করা। কিন্তু এই কাজে যেসকল উঠতি বয়সের তরুণ যুবকদেরকে তারা সামান্য পয়সা দিয়ে ব্যবহার করছে, সেইসব তরুণ যুবকদের জানা নেই যে, এই দেশে স্যাঁটার হাড্ডি সবচেয়ে বেশি ভাঙা আওয়ামী লীগেরই। সেই ইতিহাস এই সকল দুই পয়সার ভাড়াটে হুলিগান গুণ্ডাদের জানা নেই।
৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাজতন্ত্রের নাম ভাঙিয়ে যে অপকর্ম এই দেশের মাটিতে তারা করেছিল তার জের ছিল খুবই কঠিন, ইতিহাস তো বটেই আমরাও সাক্ষী। ৭৬ থেকে ৮৬ পর্যন্ত স্যাঁটার হাড্ডি এমন গুড়ো গুড়ো হয়েছিল যে মাজা সোজা করে দাঁড়ানোই ছিল কঠিন। সেই কঠিন ইতিহাস সবচেয়ে ভাল জানেন জোহরা তাজউদ্দিন, আওয়ামী লীগের সেই দুঃসময়ের কাণ্ডারী (যিনি এবং যাঁর পরিবার এখন আওয়ামী লীগে অনাহুত)। সেই মাজা এখনো সোজা হয়নি, কোনদিন হবেও না। মাজার ভাঙা হাড্ডি নিয়ে বর্তমানে জনগণ ছেড়ে সৌদি, পাকিস্তান, ভারত, চীন এইসব দেশের বাণিজ্যিক খেলার পুতুলে পরিণত হয়েছে, ভারতীয় বাহিনী নির্ভর হয়েছে, জনগণের দুশমনে পরিণত হয়েছে।
৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত এই দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোন রাজনীতি ছিল না। কিন্তু এই সামান্য সময়ের অপকর্মের পাহাড় এতোটাই উঁচু হয়েছিল যে, ৭৫ এর পর এই দেশে জোহরা তাজউদ্দিনের মতো সামান্য কিছু ডেডিকেশন ছাড়া প্রায় এক দশক কোন আওয়ামী ছিল না। আজ আবার সময়ের ব্যবধানে ২০১৪’র পর একই পরিস্থিতির পূনরাবৃত্তি শুরু হয়েছে, স্যাঁটার ভাঙা হাড্ডির ব্যথার কোন উপলব্ধি তাদের নেই। জনগণ বিচ্ছিন্ন, বাহিনীনির্ভর অবৈধ ক্ষমতার মদমত্ত নেশার ঘোরে তাদের সেই ব্যথা তারা ভুলে আছেন। কয়দিন এই অবস্থা থাকে সেটাই দেখার বিষয়।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য এমনকী আওয়ামী বর্তমান নেতৃত্বের জন্যও আমার কোন উদ্বেগ নেই। আমাদের এবং তাদের পরিণতি রাজনৈতিকভাবেই নির্ধারিত হবে, প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমার উদ্বেগ আওয়ামী লীগের নব্য এই সকল দুই পয়সার গুণ্ডা হুলিগানদের জন্য, তাদের পরিণতি কী হবে? কে তাদেরকে জনগণের রোষ থেকে রক্ষা করবে, পাড়া মহল্লায়, শহর-নগর-গ্রামে-গঞ্জে? পরিপক্ক সময়ে সবাই যে নিজের নিজের প্রাণ বাঁচানোয় ব্যস্ত থাকবে এটাই ঐতিহাসিক শিক্ষা। উপযুক্ত সময়ে তারা যে সাধ্যমতো পালিয়ে বাঁচবে অথবা ঘেরাও খাবে এতে সন্দেহের কিছু নেই। কিন্তু এইসকল হুলিগানরা কোথায় পালাবে?
আমার এই সাবধানবাণী শুধু আওয়ামী গুণ্ডাদের জন্যই নয়, বামপন্থী নাম নিয়ে যে অসভ্যরা আওয়ামী গুণ্ডামীতে মত্ত, তাদের জন্যও প্রযোজ্য, এটা ৭২-৭৫ নয়, ২০১৭। হিসাব-কিতাবে বহু পরিবর্তন আসবে।
ই-মেইলে যোগাযোগ করুন