ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা বেড়েছে। সংখ্যালঘুরা হিংস্র এবং মারাত্মক আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব হামলার বেশিরভাগই জামা’আতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), আনসার আল-বাংলাদেশ ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বলে দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) ২০১৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনটি বুধবার প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এসব সন্ত্রাসী হামলার পর ঘটনার তদন্তে ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে বাংলাদেশ সরকার কিছু রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখিয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য টার্গেটকে নিরাপত্তা প্রদান এবং চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎপরতা দেখিয়েছে। তবে প্রভাবশালী মহলের ভূমি দখলের মতো বিষয়গুলো তদন্তে সরকার ও পুলিশ প্রায়ই ব্যর্থ হয়েছে। ৩৭টি দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের বিষয় পর্যবেক্ষণ করে সংস্থাটি এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে এবং সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে উদ্বেগজনক দেশের তালিকায় ১০টি দেশের নাম সুপারিশ করে সংস্থাটি। দেশগুলো হচ্ছে মিয়ানমার, চীন, ইরিত্রিয়া, ইরান, উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, সুদান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৬ সালে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার, বুদ্ধিজীবী ও বিদেশিদের ওপর হিংস্র এবং মারাত্মক আক্রমণ বেড়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলো এসব হামলা চালিয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অবশ্য এসব বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে। হামলা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন এমন ব্যক্তিদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তবে সরকারের এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও হুমকি এবং সহিংসতার পরিমাণ বেড়েছে। এতে সব ধর্মের অনুসারী নাগরিকদের মধ্যেই একটা ভীতিকর অনুভূতি তৈরি হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে অবৈধ ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সাধারণভাবে ভূমি দখল হিসেবে পরিচিত। এসব ক্ষেত্রে মালিকানাজনিত ব্যাপক বিরোধের কথা বলা হয়। বিশেষ করে হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এর শিকার হন। এছাড়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের মার্চে ইউএসসিআইআরএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। ওই সফরের ভিত্তিতে সংস্থাটি মার্কিন সরকারের কাছে একটি সুপারিশ তুলে ধরেছে। এতে মার্কিন সরকারের উদ্দেশে বলা হয়েছে, তারা যেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি ধর্মীয় বিভেদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানান। ধর্মীয় কারণে সংঘটিত সহিংসতা এবং হয়রানির বিরুদ্ধেও সরকারের শক্তিশালী অবস্থান কামনা করেছে সংস্থাটি।
হেফাজতের ১৩ দাবি
লংমার্চের পর শনিবার মতিঝিলের সমাবেশে তাদের ১৩টি দাবি তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
দাবিগুলো হলো:
১. সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা।
২. আল্লাহ্, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস।
৩. কথিত শাহবাগি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর শানে জঘন্য কুৎসা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।
৪. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
৫. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।
৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
৭. মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা।
৮. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা।
৯. রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।
১০. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
১১. রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদ জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।
১২. সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।
১৩. অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদ জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
( হেফাজতে ইসলাম ৫ই মে শাপলা চত্বর মতিঝিল )
বললেন শাহ আহমদ শফী নাস্তিকদের কতল করা ওয়াজিব হয়ে গেছে চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ১৯ এপ্রিল ২০১৪, ০২:৩৪ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৪, ১৩:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ ২৯ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, ‘আমরা তোমাদের প্রধানমন্ত্রীকে গালি দিই নাই, শুধু শুধু আমাদের দিকে চোখ বড় করে তাকাও কেন? নাস্তিকরা তোমরা মুরতাদ হয়ে গেছ, তোমাদের কতল (হত্যা) করা আমাদের ওপর ওয়াজিব হয়ে গেছে।’ আল্লামা শফী আরও বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম কাউকে গদিতে বসাতে-নামাতে আন্দোলনে নামে নাই। আমরা আন্দোলন করছি ১৩ দফা মানার জন্য। সরকার, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নাই। তারা মুসলমান হলে আমাদের ১৩ দফা মেনে নেবে। ১৩ দফা মানলে ভালো, না মানলে নাই।’ গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র আলহাজ কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের হকার-ব্যবসায়ী আয়োজিত ইসলামি মহাসম্মেলনে আল্লামা শফী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আল্লামা শফী বলেন, ‘তারা কোথায় কী স্বপ্ন দেখেছে, কওমি মাদ্রাসার মধ্যে জঙ্গি আছে। স্কুল-কলেজে তো দুই দল মারামারি-গোলাগুলি করে, জঙ্গি বললে তাদেরই বলতে হবে। বাংলাদেশের কোনো মাদ্রাসার মধ্যে দুই দল মারামারি-গোলাগুলি করেছে, এ রকম প্রমাণ দিতে পারলে আমি তাদের পুরস্কৃত করব।’ তিনি বলেন, ‘নাস্তিকদের গালি দিলে কারও গায়ে লাগলে আমার করার কিছু নাই। আল্লাহর দেশে থাকতে হলে আল্লাহকে না দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব মানতে হবে, না হলে তুমি আল্লাহর দেশে থাকতে পারবে না।’ ইসলামি মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পেকুয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা জালাল আহমদ। – প্রথম আলো
হেফাজতের তান্ডব।
প্রকাশ্যে নাস্তিকদের হত্যার হুমকি শফির, হেফাজতের এমন ভয়ংর সহিংস তাণ্ডব। রাষ্ট্রের জনগণের জান-মালের ক্ষতি করলেন। আইন লঙ্ঘন করলেন। সংবিধান পরপন্থি ১৩ দফা নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে গেলেন। দেশকে পুরো অচল করে দিতে চাইলেন। দেশকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন ১৪ শ বছর আগে। সেই শফি হুজুরের দায় কিন্তু সরকার নিলেন। এই সহিংস দলটির সাথে আপোষ করলেন- বঙ্গবন্ধু কন্যা। হায় এই দুঃখ আমি কোথায় রাখি।
তার কাছে দোয়া নিতে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সামনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হেফাজতের সাথে রাজনৈতিক কোনো আলাপ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,
‘রাজনৈতিক কোনো আলাপ নয়, শুধু হুজুরের নিকট থেকে দোয়া নিতে এসেছি‘।
এটা স্বাভাবিক। বাংলাদেশের নারীরাও পিছিয়ে নেই।
নবী বলেছেন, নিশ্চই মহিলারা শয়তানের বেশ ধরে আসে, নিশ্চই মহিলারা শয়তানের বেশ ধরে যায়।
– আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ
আমি জানি না পর্দা করে সতীত্ব রক্ষা হয়েছে কিনা নারীর। সেটা নারীরাই ভালো বলতে পারবেন যারা পর্দা করেন।
এখানে পর্দানশীল একজন নারীকে ধর্ষনের পরে হত্যা করে ফেলা রাখা হয়েছে দেখা যাচ্ছে। তনুর কথাও সবারই মনে আছে। হিজাব পরতো।
১৯৭১ সালের বাঙালি নারীদের পোশাক।
বর্তমান কালের বাংলাদেশের নারীদের পোশাক।
এই ইসলামাইজেশন এমন কোনও সামাজিক স্তর নেই যেখানে পৌঁছায়নি। এই ইসলাইমাইজেশন জঙ্গিদের উদ্বুদ্ধ করছে জেহাদে। নারীদেরও জঙ্গি বানাচ্ছে। পর্দায় তো ঢুকিয়ে ফেলেছেই। অল্প কয়েদিন পরেই পর্দা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। রাষ্ট্রের উপর লেভেল থেকে তৃনমূল জনগণ এখন ইসলাম আক্রান্ত। তারা সেক্যুলারিজমের শিকড় উপরে ফেলেছে। এখন সমমনা মানুষগুলোকে নার্চিং করছে। সংখ্যালঘুদের অল্প কিছু তথ্য দিলাম। নাস্তিক, বা অন্যান্য ধর্মের মানুষের উপর জঙ্গি হামলার তথ্য দিলাম। মুহাম্মদ বিন কাশেম থেকে- খিলজি, খিলজি থেকে- তিতুমীর, ফরায়াজি আন্দোলন থেকে মুসলিমলীগ, পূর্ব-পাকিস্তান। ১৯৭১ থেকে এখন পর্যন্ত কত মানুষ মুসলামানদের হাতে হত্যা হলো, আর এই দেশ থেকে বিতারিত হলো তার যতটুকু আমি পেয়েছি তথ্য উপাত্ত রেফারেন্স দিয়েছি। এখন সমাজের উচ্চবিত্ত ছেলে মেয়েরাও জঙ্গি হচ্ছে। কোনও কোনও মহান বুদ্ধিজীবী বলেন- জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়- অর্থনৈতিক ডিসক্রিমিনেশনের কারণে অভাব থেকে।
এরা প্রায় সকলেই ধনী পরিবারের সন্তান। উচ্চবিত্ত। এদের জঙ্গি হবার কারণ তাহলে আর কী কারণ বাকী থাকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং?
আবুল বারাকাত বলেন- আমার হিসেবে জামাত ২০১২/২০১৩ অর্থ বছরে ১৫ শ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। এর শত করা বিশ শতাংশ অর্থাৎ ৩ শ কোটি টাকা। তারা তাদের রাজনীতিতে পূর্ণকালীন সদস্য পোষার জন্য ব্যবহার করেন।